With Myself

With Myself
"কত কি করার আছে বাকি "

Thursday, December 29, 2011

একটা বিশেষ মুহুর্তের ঠিক আগে


[নিম্নলিখিত চরিত্রগুলো অবশ্যই কাল্পনিক নয়। যতটুকু চরিত্রগুলোকে চিনেছি, সেটুকুকেই সম্বল করে লিখছি। কারও দুর্বল স্থানে আঘাত করার কোনও প্রবণতা আমার নেই। যদি কারও বিন্দুমাত্র আপত্তি থাকে জানাবেন, কাট- ছাঁট করে দেব (অত্যন্ত সতর্কভাবে)। আপনাদের মতামত ভয়ঙ্করভাবে কাম্য, ভবিষ্যতে দিনটিকে আরও সাফল্যমণ্ডিত করে তোলার জন্য।]

সকাল ৯ টা

সকাল ৭ টায় অ্যালার্ম দিয়েছিল, তারপর যা হয়; অ্যালার্মও বেজে গেছে, গাবলুও ঘুমিয়ে চলেছে। জানত যে পরের দিনটা একটা বিশেষ দিন, সবাইকে একসাথে করা গেছে। তাড়াতাড়ি ঘুমালেই হোতো; কিন্তু শুতে যাওয়ার আগে যদি একটা ভালো সিনেমা হাতে চলে আসে, স্বয়ং ছিন্নমস্তাও ঘুম পাড়াতে পারবে না। হয়ে গেলো, আবার শুতে শুতে রাত ৩ টে।
ফোনটা বেজে উঠল; জীবনে কিছু নেই বটে, তবু রিঙ টোন নাকি “ অ্যানি ‘স সঙ”।
ভাঙ্গা গলায় গাবলু, “হ্যালোও ও......“
সুব্রতদা , “কিরে এখনও ঘুমাচ্ছিস!! আমি নেমে গেছি, ক্যাব এ। মীটিং ১০ টা থেকে। শেষ হলে ফোন করছি । অনির্বাণের কি খবর? কোথায় উঠেছে? তাজ ল্যান্ড এন্ডস? আর বাকিরা? “
-“অনির্বাণদার তো ভোরে নেমে যাওয়ার কথা। কাল সকালে আবার এখান থেকে কোলকাতা চলে যাবে। না, এবার তাজ এ বান্দ্রার হাওয়া খেতে না করেছি, পুকুরের হাওয়া খাবে। রেনেসাঁসে ওঠার কথা। আরেকটু পরে হোটেলে ফোন করব, রেস্ট নিচ্ছে হয়ত। দিব্য ওর ভাই এর কাছে। সোমেশ্বর উঠেছে রাজশেখরদার কাছে, কাল রাতে পৌঁছেছে। রাজু দা অফিস ফেরত রিসিভ করেছে। আর এক মহামানব সস্ত্রীক ১১ টায় নামছেন। আমি গাড়ি বলে দিয়েছি, আমার এখানে উঠবে।“
-“ হা হা, বেশ বেশ”
-“ ইয়ে, মানে, সুব্রতদা, কুকিস গুলো.........”
-“আছে আছে, তোর বউদি প্যাক করে দিয়েছে কুকিস। মিটিং শেষে ফোন করছি“
-“thank you…thank you….. বউদি কেও অশেষ ধন্যবাদ।“

যাক, ঘুম ভেঙ্গে গাবলুর ভালো খবর হল, কুকিস পৌঁছে গেছে। ড্রাইভার জিতু সিং কে একটা ফোন করল ও; জিতু ভাই জানিয়ে দিল “নো টেনশন”,সে ঠিক ১১ টায় আরাইভাল এ প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে থাকবে। দেখল একটা মিসড কল, আর কেউ নয়, স্বয়ং শ্রী শ্রী রাজশেখর মশায়, সকাল ৭ টা? কি হল আবার?
-“হ্যালো, রাজুদা, কি ব্যাপার? সকাল সকাল কল করেছো”
-“বাবু, আমি বোধহয় আজ আর চলতে পারব না”
-“কেন? কি হোল?”
-“কাল রাতে সোমেশ্বর বাবাজী স্বপ্নে আর্সেনাল আর্সেনাল বলে চিল্লিয়ে যা দুটো দিয়েছে, আমার পা ব্যথা।“
-“হা হা হা......আরে সেরে যাবে, কি যে বলছ? একটা বাচ্চা ছেলের সাথে ফুটবল খেলতে পারো না? যাকগে, দিব্যর কি খবর?”
-“তাকে সকাল থেকে দু দুবার চেষ্টা করেছি, ফোন ব্যস্ত!“
-“হুম , স্বাভাবিক, তুমি বুঝবে না”
-“আর বুঝে লাভ নেই, সব চুল পড়ে গেলো বুঝতে বুঝতে; আর সেই বাবুর কি খবর?”
-“নামবে, ১১ টায়, তুমি সময় করে বেরিয়ো, আর সোমেশ্বরকে অবশ্যই অটোর পিছনের সিটে বসিয়ে আনবে, রাখলাম।“
-“চল, টাটা। দেখা হচ্ছে“

বেলা ১২ টা

সকালে কিছু খাওয়া হয়নি। পেটটা চোঁ চোঁ করছে গাবলুর। গেস্ট হাউসের সামনে অপেক্ষারত, কখন গাড়ি আসবে। কিছুক্ষণের মধ্যেই জিতু ভাই এর গাড়ি ঢুকে পড়ল। চোখের কিলার চশমা নামাল, এই মহামানবকে খালি চোখে দেখতে হয়। দরজা খুলতে না খুলতেই, “বন্ধু, আমি এসে পড়েছি।“, শ্রীযুক্ত তন্ময় বাবু।
-“এক মিনিট! আগে কোলা কুলিটা সেরে নেই।“, গাবলু।
অবশেষে তন্ময় আর ওর স্ত্রী শ্বেতা বোম্বাই এলো। ওরা কিছুদিনের ছুটিটে এসেছে। থাকবে কয়েকদিন। তন্ময়ের সাথে দেখা করার বহুদিনের ইচ্ছে, হয়ে ওঠেনি। ওর ব্লগ টাই একটা ভয়ঙ্কর জিনিস মোটামুটি, লেখক যে কি পিস হবে, সেটা আন্দাজ করা যায়। যাই হোক, প্যাকেট ভর্তি সন্দেশ অনেকটাই খিদে মিটিয়ে দিল। ইচ্ছে থাকলেও লোভ সামলে নিল গাবলু, সন্দেশের ভাগীদার আজ অনেক, তাছাড়া পেট টাও একটু খালি রাখতে হবে।
দুপুরে খাওয়া দাওয়ায় বেশী কিছু না, বাসমতী চালের ভাত আর চিকেন কসাতেই জমে গেলো। শ্বেতা খাওয়ার পরেই সময় নষ্ট না করে ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে গেলো গেস্ট হাউসের আশে পাশের ছবি তুলতে। আর দুই বন্ধু সুখটান দিতে দিতে গল্পে বসল। কত কথা, কত রকমের কথা, সব বলে শেষ করা যাবে না। সেগুলো এখানে উহ্যই থাক। তবে অবশ্যই, বস (ল্যাটিনে মানে করে নেবেন) দের পিণ্ডি অনেকটাই চটকানো হল। 

দুপুর ৩ টে

গাবলু,” দাঁড়াও, একটা ফোন সেরে নেই”
তন্ময়,” কে? “, একটু অন্যরকম ভেবে প্রশ্নটা করল বোধহয়।
-“অনির্বাণদা”
হোটেলে ফোন করে অনির্বাণদাকে পাওয়া গেলো। প্রথমবার গলার আওয়াজ শোনা গেলো ফোনে। আগে কেবল একটা শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা পাঠ শুনেছিলো। একটা ধীর স্থির গলা, “বল ভাই।“
-“কেমন আছো? সব ঠিক ঠাক? আমরা তোমার হোটেলে মিট করছি সন্ধ্যে ৬ টা। সব প্ল্যান পারফেক্ট। কোনও চিন্তা নেই। জেট ল্যাগ নেই তো?”
-“না ভাই, দিব্যি আছি। চলে এসো। এসে ফোন করো।“
-“একদম, আরেকজন এখানে আছে, কথা বলবে নাকি?”, গাবলু ফোনটা তন্ময়ের দিকে এগিয়ে দিল। অনেক কথা হল চাক্ষুষ দেখার আগেই।

বিকেল ৪ টে

সুব্রতদা,” তাহলে কটায় রেনেসাঁস?”
গাবলু, “৬ টায়। চলে এসো। অনির্বাণদার সাথে কথা হয়ে গেছে। ক্যাব কে হোটেল বললেই হবে। সব ঠিক ঠাক চলেছে। চিন্তা নেই।“
-“ঠিক আছে রে, দেখা হচ্ছে।“
কিছুক্ষণ পর-
রাজশেখরদা, “আমরা শুরু করছি বাবু, ৬ টায় তো?”
-“একদম।“
দিব্যকেও পাওয়া গেলো শেষমেশ। দিব্য ওর ভাইকে নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে। জিতু ভাই ঠিক ৬ টা বাজতে ১৫ মিনিট আগে গাবলু, তন্ময় আর শ্বেতাকে গেস্ট হাউস থেকে তুলে নিল গাড়িতে। অবশেষে, সেই মুহূর্ত উপস্থিত।
গাবলু আরেকজনকে আজ আসতে বলেছিল। সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে ভেবেছিল, কিন্তু বোধহয় সে আজ আসবে না।

[এর পরে কি ঘটেছিল, আমি আর লিখলাম না। সবাই একসাথে হওয়ার পরের গল্পটা আর কেউ লিখুক। অপেক্ষায় রইলাম।]

No comments:

Post a Comment